বর্ণালোক, অণুগল্প ব্লগ ও ই পত্রিকা, সেপ্টেম্বর - অক্টোবর, ২০২২
Thursday 10 November 2022
শ্রদ্ধাত্রয়ো যোগ সপ্তদশ অধ্যায়--অনুবাদ তথা গল্প রূপান্তর --বীরেন্দ্রনাথ মন্ডল
সম্পাদকীয়--
আকাশের দিকে তাকালে আমরা এক অনন্তকালের আভাস খুঁজে পাই। এই অনন্তকাল কিন্তু কোথাও থেমে থাকে না, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সে চলমান। এই জীবন, জীবন মানে, গণ্ডিবদ্ধ এক সীমারেখা। একটা কাল থাকে যখন পৃথিবীর মূল্যবান বস্তু জড়ো করে আমরা ঘর ভরি। ভবিষ্যতের জন্য গুটিয়ে রাখতে চাই অর্থ, কড়ি, ধন-রত্ন। স্বার্থপরতার চরম সীমা লংঘন করে অনেকে শুধুমাত্র ব্যক্তি স্বার্থে আতিশয্যের পাহাড় দাঁড় করাতে চায়--সব কিছুকে টাকা-পয়সার মূল্যে গুনে নিতে চেষ্টা করে। সেখানে নিঃস্বার্থ ভাবনা লেশ মাত্র থাকে না।
এক অর্থ পিপাসু ব্যক্তি লেখককে প্রশ্ন করেন, তুমি দিনভর কি এমন লেখো ! এতে কত পয়সা পাও ?
লেখক বলেন, যত সামান্য।
-- তবুও কত বল ?
-- এই মাসে পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকা--
-- ফুঃ, এই জন্য এত প্রাণপাত ?
এক অর্বাচীন লেখক বললেন, আমি তো কিছুই পাই না !
তাকে কি বলা যায়, অর্থ পিপাসু ব্যক্তি মুখে তখন কোন ভাষা খুঁজে পান না, কেমন তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে ওঠেন।
কিন্তু আমরা লেখক কবিরা জানি যে লেখাতে কতটা মনের খোরাক ভরা থাকে। মন সন্তুষ্টি, মানে জীবনের অর্ধ সন্তষ্টির প্রাপ্তি। লেখা আমাদের নেশা, পেশা নয়, মন স্বাস্থ্যের উপযোগী নিঃস্বার্থ ভাবনার দ্যোতক।
মানুষের ভালো থাকা না থাকার ব্যাপারটা তো সম্পূর্ণ মনের। লেখা মন ভরায়, নিজের জন্যে, অন্যের জন্যে, সেখানে অর্থ নেই, স্বার্থ নেই, সময় মাপের প্রাপ্তি নেই।
এবার ফিরে আসি আসল প্রসঙ্গে, এবার আমাদের গল্পের ব্লগ ও ই- পত্রিকা বর্ণালোক প্রকাশিত হচ্ছে। বারবার লেখক, পাঠকবর্গ ও সর্বসাধারণকে এই পত্রিকা পড়ে দেখতে অনুরোধ জানাই। ধন্যবাদ--
তাপসকিরণ রায়।
সম্পাদকীয়:
রথের রশিতে টান দিয়ে সেই যে শুরু হয়ে যায় উৎসবের বাদ্যি বেজে ওঠা,এক এক করে পূজোর যেন মিছিল শুরু হয়ে যায়।দুর্গা পূজা ,লক্ষ্মী পূজা,কালী পূজা পার হতে না হতেই ছট্ পূজার সমারোহে মন মেতে ওঠে। এত উৎসবের মধ্য দিয়ে যেতে যেতে কখন যেন বেলা ছোট হতে শুরু করে। হেমন্তের বেলা বড়ো স্পর্শকাতর! বড়ো তাড়াতাড়ি বেলা ফুরিয়ে ,ঝুপ করে সন্ধ্যা আসে নেমে। ধূসর কুয়াশায় সন্ধ্যার মুখ দেয় ঢেকে। হালকা হিমের পরশে সন্ধ্যেগুলো বড়ো নির্জন মনে হয়,সর্বত্রএকটা মনকেমনের ছায়া!একাকীত্বের নির্জনতায় একা একা চোখ মেলে সগগো বাতি পথ দেখায় পূর্ব পুরুষদের। হেমন্তে নূতন ফসল কেটে ঘরে তোলার পালা । নূতন ধানের সঙ্গে নবান্ন উৎসব তো গ্রামীন জীবনের অন্যতম উৎসব।প্রকৃতির সঙ্গে মিলে মিশে থাকা পল্লীজীবনের পরতে পরতে জড়িয়ে থাকে কত না প্রবাদ ,কত গল্পের অবতারণা হয় দৈনন্দিনের জীবনকে ঘিরেই। সব গল্পই তাই জীবন মুখী,জীবনকে ঘিরেই তার যত উৎসব , আর তাই নিয়েই কত না গল্প গাথার আয়োজন!–সাবিত্রী দাস।
সম্পাদকীয়:
জীবন কখনও শূন্য থাকে না।একটি উৎসবের কাল শেষ হলে শুরু হয় আরো একটি উদযাপন।মৃন্ময়ী রূপে প্রকৃতি ও সৃষ্টির আরাধনা শেষে ভক্তকুল পরমব্রহ্ম বা নিরাকার সাধনের দুরূহ পথের যাত্রী হবেন এবার তাই শুভ হয় বিজয়া।বাহ্যিক শেষে অন্তরে চোখ।আমাদের শারদীয় উৎসব শেষে আবার শুরু পথ চলা।বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণের অবশ্যই একটি অর্থনৈতিক দিকও আছে।পূজো শেষ হলে সারা বছরের রোজগার শেষে পরিবারের জন্য নতুন জামা কিনে ঘরে ফিরবেন ঢাকি রা,ছোটো ব্যবসায়ী,মৃতশিল্পীরাও।হেমন্তের শেষে নতুন খড় পড়বে চালে,নতুন করে বীজ বোনা শুরু।আমাদের চলা থামে না।সামনে শীতের উৎসব ও বইমেলা।সৃজন চলতেই থাকে।এভাবেই নতুন নতুন লেখায় ভরে উঠুক বার্ণালোকের চিরসবুজ পাতাগুলি।সকলকে শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা।উৎসব হোক জীবনের আবহমান।—-জয়িতা ভট্টাচার্য।
Wednesday 9 November 2022
হঠাৎ ফোন -- সন্ধ্যা রায়
Tuesday 8 November 2022
বন্দুকের খেলা--তাপসকিরণ রায়
বন্দুকের খেলা--
তাপসকিরণ রায়
অন্ধকার হাতড়ে যাচ্ছিলাম। একটা লাঠি, একি, লাঠি না, একটা পিস্তল মত কিছু একটা হাতে ঠেকলো। ওটাকে হাতে তুলে নিলাম। আমি চমকে উঠলাম না। আঁধারে চকমকিয়ে উঠলো পিস্তলটা। ঠিক এমনি সময় লোডশেডিং ভেঙে দপ করে আলো জ্বলে উঠলো।
আমার হাতে পিস্তল দেখে স্ত্রী, অমি, হেসে উঠলো, ওকি তোমার হাতে ওটা কি ? খেলনার পিস্তল!
হতে পারে খেলনা, আমি বললাম, কিন্তু এত ভারী কেন বলো তো ?
আসলটা কি করে আসবে শুনি? স্ত্রী বলে উঠলো।
তা ঠিক, তবে তোমার ভাই কিন্তু কাল এসেছিল, আমি বলি।
ভাইয়ের নাম শুনে স্ত্রী অসন্তুষ্ট হয়ে বলল, ও পার্টি করে ঠিকই, তবে পিস্তল নিয়ে ঘোরার মত ছেলে ও না।এ নিয়ে আর আমি বিন্দুমাত্র বিতর্কে জড়াতে চাইলাম না। কিন্তু শালাবাবুকে কতটা বিশ্বাস করা যায় তা আমিই জানি।
আমি পিস্তল হাতে নিয়ে আকাশের দিকে উঁচিয়ে ধরলাম। তারপর হঠাৎ খেলার ছলে স্ত্রীকে টার্গেট করে ট্রিগার চেপে দিলাম। ধুম, করে একটা শব্দ হল। চিৎকার দিয়ে স্ত্রীর রক্তাক্ত দেহ মাটিতে লুটিয়ে পড়লো।
মা-রা কি বেশ্যা হয়? -- মৌসম সামন্ত (অসুর)
মা-রা কি বেশ্যা হয়? --
মৌসম সামন্ত (অসুর)
"মা! এই রবিবারেও তোমার কাজ! কোথায় কি চাকরি করো গো? যার জন্য প্রতিদিন এত সকালে বেরিয়ে যাও আর কতো রাতে ফেরো? আর তোমাকে এতো দুর্বল-ই বা লাগে কেন? তোমার কি হয়েছে?" মাকে একটু চেঁচিয়েই বলে উঠলাম।
"বয়স হচ্ছে তো সোমু,তাই আর কি...! আচ্ছা আজ তাড়াতাড়ি আসার চেষ্টা করবো...ঠিক আছে?"
"আচ্ছা, পাড়ার লোক তোমার সাথে কথা বলে না কেন? ওই বখাটে ছেলেগুলো তোমার দিকে এমন কটুক্তির দৃষ্টি নিয়ে তাকায় কেন? আমি বুঝতে পারি না..." আমি বললাম।
"ওইটা মেয়েদের সমস্যা রে, তুই বুঝবি না। আমি আসছি, এসে রাতে গল্প করে ঘুম পাড়িয়ে দেবো, আজ প্রমিস আর হ্যাঁ, কেউ ডাকলে দরজা খুলবি না শুধুমাত্র আমি ছাড়া, আমি ডাক দিলেই। ঠিক সময়ে খাবারটা খেয়ে নিস।" মা বললো।
"মা, আমি স্কুলে যাবো না? সবাই স্কুল যায়, মজা করে আর আমি...!" এই বলে আমি একটু মনমরা হয়ে গেলাম।
মা বললো- "পরের মাসেই আমি তোকে হোস্টেলে ভর্তি করে দেবো বাবু! টাকাটা পুরো পেলেই..."
এরপর মা বেরিয়ে যায়। বুঝতে পারি না মা কি কাজ করে যে, এরকম একটা অদ্ভুদ সেজে বাড়ি থেকে বেরোয়। পাড়ার লোক মাকে দেখে থুতু ফেলে, বেশ্যা বলে। এ বাবা, বেশ্যা মানেটা কি মাকে জিজ্ঞেস করতেই ভুলে গেলাম। রাতে এলে জিজ্ঞেস করবো। নিশ্চয় চাকরির একটা দিক হবে, হয়তো কোন ভালো পোষ্ট। মা চলে গেছে সকাল ৮ টায়। এইসব ভাবতে ভাবতে সময়টা কখন যেন ১০টায় চলে এল। হঠাৎ সুব্রতদা এসে আমাদের ঠেকে এসে ব্যঙ্গ করে বলতে লাগলো- "ও মিনতি! আছো নাকি...একটা নতুন কাষ্টমার আছে, দুঘন্টায় ৪০০০ দেবে বলছে। তুমি কি রাজি? তবে বলো..."
আমি অবাক হয়ে জানলা দিয়ে বাইরে তাকালাম। সুব্রতদা আমাকে লক্ষ্য করে বলবো, "কি রে বেশ্যার ছেলে, তোর নাদুসনুদুস মা টা কই?"
আমি বুঝতে পারলাম না যে সুব্রতদা কি বলতে চাইলো। আমি বললাম- "মা তো বেরিয়ে গেছে! কেন?"
সুব্রতদা ঠোঁট বেঁকিয়ে পাশে দাঁড়ানো লোকটার সাথে কি একটা কথা বলে আমায় বললো..."তোর মায়ের নম্বর আছে?"
আমি মায়ের নম্বরটা গড়গড় করে বলে দি। অজানা লোকটা নম্বরটা লিখে নেয়। এরপর আমি ফোন নম্বর নিলো কেন জিজ্ঞেস করাতে সুব্রতদা বলে ওঠে- "তেমন কিছু না, তোর মায়ের সাথে একটু কাজ আছে আর কি..."
আমি ভাবলাম- "কি এমন কাজ,যার জন্য ৪০০০ টাকা!"
বাবা আমার মাকে ছেড়ে চলে গেছে আজ ৬ বছর, একটা অন্য মহিলকে বিয়ে করে সংসার করছে। সেই থেকে সংসারের হাল মায়ের এই চাকরি চালাচ্ছে।
রাত বাড়লো। মা এখনো ফেরেনি। আমি জানতাম, এটাই হবে আর তাই তাড়াতাড়ি খেয়ে একাই ঘুমিয়ে পড়লাম, তবে আজ সারাদিন একটা কথাই মাথায় ভাসছে, বেশ্যাটা কি!
এরপর মা এলো। দেখলাম ব্যাগটা রেখে বাথরুমে গেলো, চুলটা যেন দেখে মনে হলো কেউ টেনে ধরেছিল, মুখটা পুরো লাল, হাত-পা লাল, ঠোঁটটা মনে হলো কেউ ছিঁড়ে চিবিয়ে দিয়েছে, সারা শরীরটা যেন কোন ক্ষুধার্ত কুকুরের ক্ষুধা নিবারণ করেছে।
মা বেরিয়ে দেখল, আমি জেগে আছি। কোনরকম অপেক্ষা না করে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলাম, "বেশ্যা কি?"
মা কথার উত্তর দেয়না। ততক্ষণে মায়ের ব্যাগ খুলে প্রায় ৮০০০ টাকা আর ৭টা পেইনকিলার পেলাম আর সাথে ব্যাথার ঔষুধ।
মা একটাই কথা বলল যেটা আমার কানে আজও বাজে এই যে-
"আমি তোর মা, একদিন তুই বড়ো হবি, জানবি তোর মা কি কাজ করে, বেশ্যা কি সব সব...নয়তো সেদিন আমায় তুই ঘেন্নাও করবি, যা মন চায় করিস বাবা, শুধু মনে রাখিস সমাজের কাছে আমি বেশ্যা, তবে তোর কাছে আমি মা...সমাজ কি ভাবলো আমার কিছু যায় আসে না, তবে তুই ভাবলে আসে। আর বাবা, মায়ের থেকে বড়ো কাজ বা শব্দ হয়না!"
এই বলে মা কাঁদতে শুরু করে দিল।
আচ্ছা আপনারাই বলুন তো, মা-রা কি সত্যিই বেশ্যা হয়?
সমাপ্ত
সম্পর্ক -- ডঃ সুজিত কুমার বিশ্বাস
সম্পর্ক --
ডঃ সুজিত কুমার বিশ্বাস
-শুভ, -এই শুভ এদিকে আয় বাবা !
- হ্যাঁ বাবা বলো।
প্রমথেশ অবাক হয় বাবা ও ছেলের সংলাপ শুনে। যেন কত চেনা, কত দিনের কত পরিচিত সম্পর্ক। কিন্তু সে জানে শুভ বিকাশ বাবুর দত্তকপুত্র। যেদিন বিকাশ বাবু শুভকে পুত্র হিসাবে গ্রহণ করেন সেদিন প্রমথেশ হাজির ছিল সেখানে। আজ শুভ আর বিকাশবাবু সম্পর্কের বন্ধন তাকে অবাক করে দেয়। আর প্রমথেশ বাবু তার নিজের ছেলের কথা ভাবতে থাকেন। তার ছেলে এমবিবিএস পড়তে এখন ব্যাঙ্গালোর। শুধু মাঝে মাঝে কথা হয়। দেখা হয় ভিডিয়ো কলে, সাক্ষাৎ হয় এভাবেই।কিন্তু দেখা হয় না অনেকদিন। আজ এদের দুজনের সম্পর্ক দেখে নিজেকে অবাক হতে হয় প্রমথেশ বাবুর।
- ছেলে তো বড় হলো এবার একটা বিয়েথা তো দিতে হয়! প্রমথেশ জিজ্ঞাসা করে।
- সেটাই। আমি যে ভাবছি না, তা কিন্তু নয়। ভাবছি। কিন্তু হয়ে উঠছে না। তাছাড়া শুভও তেমন আগ্রহ দেখায় না।
শুভ ভালো ছেলে। পড়াশোনা করে। এখন বাবার প্রতিষ্ঠিত স্কুলেই কাজ করে সে। কিন্তু কোনো মেয়ের সাথেই সে যোগাযোগ করতে পারেনি। আজকের দিনে এটা ভেবে অবাক হতে হয়।
- আসলে কি জানো প্রমথেশ! আমার কোথায় একটা ঘাটতি আছে। একটা হীনমন্যতা কাজ করে এতদিন পর। কে কীভাবে নেবে এই ভেবে? এতদিন ছোটো ছিল সমস্যা হয়নি। কিন্তু-
- কিন্তু নয়! তোমাদের বন্ধন তো ভালো। দেখি আমিই একবার চেষ্টা করে।
- দেখো।
- ভাইটাকেও তো বিয়ে দিতে পারলাম না একই কারণে।
- মানে?
- কী কারণ?
- আমার বাবা ওকে দত্তক নিয়েছিলেন। ও তো আমার মায়ের পেটের ভাই নয়।
- এই তথ্যটা আমি এতদিনে জানতাম না।কিন্তু দুই ভাইয়ের বয়সের ব্যবধান দেখে একটা সন্দেহ যে প্রমথেশের হয়নি, তা কন্তু নয়।
- আসলে বলিনি। তাছাড়া আগেকার অনেকেই জানে বিষয়টি।
প্রমথেশ চুপ করে থাকে।
সমাপ্ত
মেয়ের জন্মপাপ -- বহ্নিশিখা
মেয়ের জন্মপাপ -- বহ্নিশিখা
প্রতিটা মানুষের চলার পথে কাঁটার বেড়া।
ইচ্ছানুযায়ী কাজের মাঠে হয় কাদা নয় কংক্রিট। দিতির জীবনে কোনদিন তার পরিকল্পনামতো কাজ সম্পন্ন হতে দেখেনি।
আজও বেলা আসেনি। দিতি ভাবে সবাই জপে আল্লাহ্ আল্লাহ্। আমি জপি বেলা বেলা, যন্ত্রণা!কি সমস্যা হলো কে জানে। ফোনটাও অফ। ওর ছেলেটা হয়ত কোন সমস্যা করেছে। এর হয়েছে জ্বালা।
কুড়ি বছর বয়সে বিয়ে।তারপরে আর এক কুড়ি পার করে দিলো জুয়ার আসর থেকে বরকে ঘরে ফেরাতে। এরমধ্যেই দুই ছেলের জন্ম দিয়ে ঝিয়ের কাজ নিয়েছে। আর কুড়ি চলে যাবে জুয়ারি বখাটে ছেলেকে জীবন চেনাতে।
"মেয়ে হয়ে জন্ম নেওয়া পূর্ব জন্মের পাপের ফল" ছোটবেলা শুনেছিল দিতি। নারীবাদী দিতি কুসংস্কারে বিশ্বাসী না হলেও আজকাল কথাগুলো তাকে খুব ভাবায়।
কি পাপ করেছিল বেলা? দু'দুটো পর্যায়ে পুরুষকে পথে আনতে রাতদিন এক করছে। হয়ত বেলার পরিশ্রম সার্থক হবে।হয়তো হবে না। ধুকে ধুকে নিঃস্ব হবে বেলার চোখের সামনেই। এই ফেরাতে না পারাই কি পাপ?
এমন অজস্র বেলার জীবন -বিত্তভেদে ভিন্নমুখী। কে খবর রাখে তার।তবুও নারীর পূর্ণোদ্দম সংসারে।অথচ বিশ্বসংসারে নারী এখনো উপেক্ষিত। লাঞ্ছনার শিকার।
ভাবতে ভাবতে নিঃসন্তান দিতির হাতে কাজ ফুরিয়ে যায়।সন্তানের মঙ্গল কামনায় এক মায়ের মনের হু হু করা কান্না তার বুকের ভিতর পৌষের শীতলতা অনুভব করে।ভুলে যায় ক্লান্তি। মাস কাবারি টাকায় বাঁধা বেলার কাজে না আসা।
সে জানে ঈশ্বরও মানুষের মতো লোভী। নাস্তিক দিতির প্রার্থনা ঈশ্বর শুনবে না জেনেও সে বিপথে যাওয়া বেলার ছেলের জন্য প্রার্থনা করে।
সমাপ্ত
শ্রদ্ধাত্রয়ো যোগ সপ্তদশ অধ্যায়--অনুবাদ তথা গল্প রূপান্তর --বীরেন্দ্রনাথ মন্ডল
শ্রদ্ধাত্রয়ো যোগ সপ্তদশ অধ্যায় -- অনুবাদ তথা গল্প রূপান্তর -- বীরেন্দ্রনাথ মন্ডল ------------------------------------------- ...
-
সম্পাদকীয়-- আকাশের দিকে তাকালে আমরা এক অনন্তকালের আভাস খুঁজে পাই। এই অনন্তকাল কিন্তু কোথাও থেমে থাকে না, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সে চলমা...
-
স্মৃতি শেখর মিত্রর গল্প -- ঈশ্বর ভরসা মেয়েটার দুদিন ধরে খুব জ্বর আসছে। সহেলীর মা সহেলীর জন্য ভীষণ চিন্তায় আছেন। ওদের বাড়ি ঝাড়খন্ড রাজ্যে...
-
জড়োয়ার ঝুমকো-- কবিরুল (রঞ্জিত মল্লিক) পপি নিঃশব্দে শাশুড়ির ঘরে ঢুকেই দরজাটা আটকে দিল। বাড়ি ফাঁকা। সবাই ...